বজ্রপাত কেন হয়?



    ঋতুর নানা বৈচিত্র্যে অপরূপ হয়ে উঠে দেশ।প্রত্যেক ঋতুই যেন পালা বদল করে একটির পর অন্যটি আসে। তার মধ্যে অন্যতম এবং সুপরিচিত একটি ঋতু হল বর্ষাকাল। বাংলা বারো মাসে আষাঢ় ও শ্রাবণ এ দুই মাস বর্ষাকাল। বর্ষাকালে প্রচুর পরিমানে ঝড়, বৃষ্টি হয়ে থাকে। এক কথায় বললে বর্ষাকাল ঝড়ের মৌসুম। তাছাড়াও কালবৈশাখী সম্পর্কে আমরা সবাই কম বেশি অবগত আছি। কালবৈশাখী অথবা বর্ষাকাল এ দুই সময়েই বজ্রপাত সহ ঝড় হয়ে থাকে। প্রায় সময়ই বজ্রপাতে বিভিন্ন ক্ষতিসহ মানুষের মৃত্যুও হয়ে থাকে। আপনি জানেন কি বজ্রপাতের সময় কি কি করনীয়?



    বজ্রপাতের সময় করনীয়

    বর্তমান বিশ্বের অনন্য এক আবিষ্কার বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ ছাড়া আমরা অনেকাংশই অচল। সাথে সাথে বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র বাড়ছে। তবে বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র কিভাবে রাখা উচিৎ? মূলত টিভি, ফ্রিজ, এসি, মোবাইলফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি। এসবগুলো বজ্রপাতের সময় অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে। বন্ধ রাখলেই হবে না, এর পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে সবকিছুর বৈদ্যুতিক সংযোগ খোলা আছে কি না। অর্থাৎ টিভি, ফ্রিজ কিংবা মোবাইলফোন এগুলোর প্লাগ বিদ্যুৎ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।


    অন্যতম ও সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস হল মোবাইলফোন। বর্তমানে মোবাইল শুধু যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহার হচ্ছে না। আধুনিকতার ছোয়ায় এখন স্মার্টফোন আবিষ্কার হয়েছে। যার ব্যবহার অনেক বিস্তৃত। বজ্রপাতের সময় অবশ্যই মোবাইলের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করতে হবে। কেননা আমরা জানি মাঝে মাঝে স্মার্টফোনে তরিৎআহত হয়ে থাকে। তবে বজ্রপাতে মোবাইল বা স্মার্টফোন বন্ধ রাখা সবচেয়ে উত্তম। এতে ফোনের পাশাপাশি আপনিও নিরাপদে থাকবেন।




    বজ্রপাত কেন হয়?

    আমরা সবাই মোটামুটি জানি পানি জলীয়বাষ্পে পরিনত হয়ে মেঘে রূপান্তর হয়। যখন পানির কনা অর্থাৎ জলীয়বাষ্প মেঘের সাথে লাগে তখন বজ্রপাত হয়। আবার মেঘের সাথে মেঘের সংঘর্ষ হলেও বজ্রপাতের সৃষ্টি হয়। মূলত পানি কনা আয়নিত হয় এবং মেঘে সাথে সংঘর্ষ হয়। বজ্রপাত হলে কিছু কিছু সময় ক্ষতির হার বেড়ে যায়। তাই আমাদের সবসময় সচেতনতা আবলম্বন করতে হবে। 





    বজ্রপাতের সময় যেসব কাজ না করা 

    ১. রাস্তাঘাটে থাকা অবস্থায় বজ্রপাত শুরু হলে দ্রুত বাড়িতে বা নিরাপদ স্থানে অবস্থান করুন।

    ২. বারান্দা, জানালা কিংবা দরজার সমানে অবস্থান থেকে বিরত থাকুন।

    ৩. পুকুর কিংবা নদীতে যাওয়া ও কোন কাজ থেকে বিরত থাকুন। এক্ষেত্রে পানি দিয়ে কোন কাজ না করা উত্তম।

    ৪. বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

    ৫. ল্যান্ডফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

    ৬. ধাতব বস্তুর স্পর্শ করা যাবে না।


    বজ্রপাতের উপকারিতা 

    বজ্রপাত যখন হয় নাইট্রোজেন গ্যাস ও অক্সিজেনের গ্যাস একত্রিত হয় এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড উৎপন্ন হয়। অক্সাইড পানির সাথে মিশে নাইট্রিক এসিড তৈরি করে। আমরা কম বেশি জানি বিভিন্ন সময় বৃষ্টির পানিতে এসিডের পরিমান এক হয় না, আবার স্থান ভেদেও এর পার্থক্য দেখা যায়। নাইট্রিক এসিডের একটি অন্যতম গুন হল এটি দ্রুত মাটির অভ্যন্তরে যায়। এবং মাটিতে থাকা বিভিন্ন খনিজ পদার্থের সাথে দ্রবীভূত হয়। এসিড এর সাথে ধাতব অক্সাইড বিক্রিয়া করে নাইট্রেড লবণ তৈরি হয়। এই নাইট্রেড লবন উদ্ভিদের পু্ষ্টি উপাদান ও গুনাগুন বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বায়ুমন্ডলে শতকরা ৭৭.১৬ ভাগ নাইট্রোজেন রয়েছে। অন্যদিকে মাটিতে শুধু শতকরা ০.১ ভাগ নাইট্রোজেন আছে। প্রোটিন বা অ্যামিনো এসিড উৎপাদনে নাইট্রোজেন গুরুত্বপূর্ণ।


    বজ্রপাতের সময় কোথায় থাকা উচিৎ

    ১. বজ্রপাতের সময় উঁচু জায়গা বিপদজনক। তাই আশেপাশে থাকা ভবনের অবস্থান করুন।

    ২. বিদ্যুতের খুঁটি বা যাত্রী ছাউনি, ফাকা জায়গায় বজ্রপাতের সম্ভবনা বেশি থাকে।

    ৩. ঝড় বা বজ্রপাতের সময় গাড়ি না উঠা। যদি গাড়ি থাকা অবস্থায় বজ্রপাত হয়, তবে গাড়ির গ্লাসে হাত দেয়া যাবে না।

    ৪. লোহার কল,পাইপ, রেলিং থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান করুন।

    ৫. দরজা, জানালা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখুন এবং এগুলো থেকে দূরে থাকুন।

    Post a Comment

    2 Comments