খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা


    পুষ্টি ও গুনের দিক থেকে খেজুর মানবদেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বলা যেতেই পারে খেজুর আমাদের জন্য আশির্বাদস্বরূপ। খেজুরে আয়রন, খনিজ, ক্যালসিয়াম, এমাইনো এসিড, ফসফরাস কোনো কিছুরই কমতি নেই। মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে খেজুরের ভূমিকা অনেক। বিভিন্ন গবেষকদের মতে, নিয়মিত খেজুর খেলে দেহের শক্তি বাড়ে এবং মানসিক উন্নতি ঘটে। চলুন জেনে নেই খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা:


    খেজুরের উপকারিতা

    ১. পটাসিয়াম থাকায় খেজুর খেলে বিপি নিয়ন্ত্রণ থাকে যা দেহের স্ট্রোকের ঝুকি কমায়। 
    ২. খেজুরে বিদ্যমান আয়রন দেহের হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরন করে।
    ৩. খেজুরের অধিক মাত্রায় ফাইবার রয়েছে।ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সাহায্য করে।
    ৪. খেজুর দেহের খনিজের ঘাটতি পূরন করে থাকে।
    ৫. খেজুর গর্ভবতী নারী ও গর্ভে থাকা শিশুর জন্য অনেক উপকারী। তাই গর্ভবতী নারীর পরিমান মত খেজুর খাওয়া উচিৎ।
    ৬. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে খেজুরের ভূমিকা অপরিসীম। 
    ৭. ক্যালসিয়ামের অন্যতম উৎস হল খেজুর। তাই খেজুর খেলে হাড় মজবুত হয়।
    ৮. খেজুরে বিদ্যমান গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ যা দেহের তাত্‍ক্ষণিক শক্তির যোগায়। তাই নিয়মিত খেজুর খাওয়া জরুরি। 
    ৯. খেজুর দেহের ওজন বৃদ্ধিতে সাহয্য করে।

    খেজুরের পুষ্টি উপাদান

    খেজুরের পুষ্ট উপাদান পুরুষ ও নারী সবার জন্যই উপকারী। খেজুরে থাকা পু্ষ্টি উপাদান গুলো হল:
    ১) ক্যালোরি আছে ২৭৭ গ্রাম পরিমান।
    ২) প্রোটিনের পরিমান ১.৮১ গ্রাম।
    ৩) চর্বি রয়েছে ০.১৫ গ্রাম।
    ৪) খেজুরে কার্বোহাইড্রেট আছে ৭৫ মিলিগ্রাম।
    ৫) ফাইবার বিদ্যমান ৬.৭ গ্রাম পরিমান।
    ৬) খেজুরে ভিটামিনএ ৩% বিদ্যমান।
    ৭) ভিটামিন বি এর পরিমান ৬০.২৫ মিলিগ্রাম।
    ৮) ম্যাঙ্গানিজ আছে ০.৩ মিলিগ্রাম পরিমান।
    ৯) ৫৪ মিলিগ্রাম পরিমান ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে।
    ১০) পটাসিয়াম রয়েছে ৬৯৬ মিলিগ্রাম পরিমান।

    ​ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ

    খেজুরে থাকা ফাইবার দেহের শর্করার পরিমান ঠিক রাখে। আমরা সকলেই কম বেশি জানি, খেজুরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। ইনসুলিন সিক্রেটে অগ্ন্যাশয়ের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। করতে পারে। 

    হার্টের সমস্যা প্রতিরোধ

    বর্তমান সময়ে কলেস্টেরলের জন্য হার্টের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। হৃৎপিণ্ডের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং রক্তের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে খেজুর ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ১/২ টি খেজুর খেতে পারেন। 

    বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি

    বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেছে যে, খেজুর দেহের শুক্রাণুর পরিমান বৃদ্ধি করে থাকে। যা বন্ধ্যাত্ব দূর করে থাকে। তাছাড়াও খেজুর ডিএনএ’র গুণগত মানের উন্নতি ঘটায়। এমনকি খেজুর শরীরের দূর্বলতা দূর করে।

    ​উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

    উচ্চ রক্তচাপ কমাতে প্রতিদিনই খেজুর খেতে হবে। কেননা খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়ামসোডিয়াম। পটাশিয়াম ও সোডিয়াম দেহের উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এমনকি পটাশিয়াম ও সোডিয়াম শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বের করে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরলের পরিমান ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে।

    হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধি

    দুধ আয়রনের পরিমান যেমন বেশি, তেমনি খেজুরেও আয়রনের মাত্রা অনেক। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, আয়রন রক্তে বিদ্যমান হিমোগ্লোবিন এবং প্রোটিনের পরিমান বৃদ্ধি করে। আপনি চাইলে দুধের সাথে খেজুর ব্লেন্ড করেও খেতে পারেন। এতে উপাকারীতা দ্বিগুন হয়। রাতে অল্প পানিতে খেজু ভিজিয়ে রেখে, ভোরে তা খালি পেটে খেতে পারেন।

    ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধে

    খেজুরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকায় এটি দেহের দীর্ঘস্থায়ী রোগ মুক্ত করে। খেজুর খেলে দেহ সজীব ও সতেজ থাকে। খেজুর দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখে। খেজুরে ভিটামিন সি যা ত্বকের জন্য উপাকারী। নিয়মিত খেজুর খেলে বয়স বৃদ্ধি পেলেও শরীরের তেমন তারতম্য ঘটে না। অর্থাৎ দীর্ঘদিন যুবক থাকা যায়।


    খেজুরের অপকারিতা

    প্রতিটি খাবারের কিছু কিছু অপকারীতা রয়েছে। তবে তা সবার জন্য অপকারী নয়, শুধু ব্যাক্তি ভেদে প্রযোজ্য। যাদের শরীর মোটা হয়ে যাচ্ছে তাদের একটু খেয়াল করে খাবার খেতে হয়। শরীরে সুগারের পরিমান বাড়ায় খেজুর। তাই মোটা ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যাক্তিদের ডাক্তারের পরামর্শে নিয়ে খাওয়া উচিৎ। দিনে ২ বা ৩ টা খেজুর খেতে পারেন। অতিরিক্ত পরিমানে খেজুর খেলে পেটের ব্যাথা অথবা পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে।






    Post a Comment

    1 Comments