Food Adulteration-ভেজাল খাদ্য চেনার উপায়


    ভেজাল খাদ্য কি

    আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য উপাদান হল খাদ্য। খাদ্য যেমন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে আবার খাদ্যের কারনে মৃত্যুও হয়। যদি আমরা বেজাল খাদ্য খাই তবে তা আমাদের মৃত্যুর কারন হয়ে দারায়। ভাবতে পারেন আমরা তো প্রতিদিনই কম বেশি ভেজাল খাদ্য খাই, কিন্তু মরি না কেন? ভেজাল খাদ্য আমাদের ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। প্রশ্ন জাগতেই পারে এই ভেজাল খাদ্য আসে কোথা থেকে? আমরা নিজেরাই ব্যবসায় অধিক মুনাফা লাভের আশায়, খাবারে রাষায়নিক দ্রব্য মেশাই। এতে খাবার সম্পূর্ণরূপে বিষাক্ত হয়ে পড়ে। এককথায় কোন উৎস থেকে ভাল খাবার সংগ্রহ করে, তাতে অস্বাস্থ্যকর উপাদান মিশানোকে ভেজাল খাদ্য বলে।




    ভেজাল খাদ্য কাকে বলে

    শাব্দিক দিক দিয়ে "ভেজাল" অর্থ হচ্ছে মিশ্রিত বা খাঁটি না। খাদ্যের সাথে কোন ক্ষতিকর দ্রব্য মিশানোই খাদ্যে ভেজাল। খাদ্যে ভেজাল মিশ্রন করলে বিভিন্ন শাস্তিসহ জরিমানাও রয়েছে। তাই আমাদের সকলের উচিত খাদ্যে ভেজাল থেকে বিরত থাকা। বর্তমানে বাজারে চাল থেকে শুরু করে সব পন্যে ভেজাল মিশানো হয়।




    দ্রব্য কেনার আগে যা দেখা উচিৎ:

    চালের বস্তার মধ্যে মেশানো হয় সাদা ছোট ছোট পাথর কনা, দুধে দেয়া হচ্ছে পানি এবং ময়দা। প্যাকেটজাত দুধের সাথে মেশানো হয় তেল, চিনি আর রং। এমনকি দুধের ছানায় ফরমালিন দেওয়া হয়। কাচা আম, কাচা কলা রাষায়নিক দিয়ে পাকা করা হচ্ছে। বিভিন্ন বিস্কুট, ব্রেড, মুরালির কারখানার পরিবেশ খুব অস্বাস্থ্যকর। নানা রেস্তরাতে পুরোনো তরকারিতে মেশানো হচ্ছে রং। যা দেহের পু্ষ্টি পূরনের বদলে বিষে পরিনত হয়। তাই আমাদের এইসব পন্য ক্রয়ের সময় দেখে শুনে কেনা জরুরি।




    খাদ্যে ভেজালের কারণ

    আমরা প্রতিদিনই অনেক ধরনের সুস্বাদু খাবার খাই। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি এই সুস্বাদু খাবারই যদি আমদের জন্য বিষ হয়ে দাড়ায়! কিন্তু সব জেনেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যে ভেজাল দেয়। খাদ্যে ভেজাল দেয়ার প্রধান কারনগুলো হল :–

    ১. প্রচুর পরিমানে লাভের আকাঙ্ক্ষা।

    ২. সুষ্টু জবাবদিহিতার অভাব।

    ৩. আইনের সঠিক প্রয়োগ না হওয়া।

    ৪. নীতি-নৈতিকতার না থাকা।

    ৫. খাদ্য পরিবহন ও সংরক্ষণের নানা জটিলা সৃষ্টি হওয়া।


    খাদ্যে ভেজাল প্রতিরােধ

    খাদ্যে ভেজাল এর ফলে আজ আমাদের এই বিশ্বে ক্যান্সার সহ নানা রোগ বেশি দেখা দিচ্ছে। যার পরিনামে মানুষের মৃত্যু হয়। তাই খাদ্যে ভেজাল সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া উচিৎ। চলুন জেনে নেই খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে আমাদের কি করনীয়:-
    ১. আইন প্রয়োগ : খাদ্য ভেজাল মুক্ত করার জন্য সরকারি যেসব আইন রয়েছে তা প্রয়োগ করা। সঠিক ভাবে আইন প্রনয়ন ও স্বজনপ্রীতি না করা।বিশুদ্ধ খাদ্য যে আইন ২০১৩ এ প্রনয়ন করা হয়েছে তার সঠিক প্রয়োগ। ভেজাল খাদ্যের জন্য দেওয়া শাস্তি মিডিয়ায় প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
    ২. দ্রব্যের মান নির্ণয় : বাজারে থাকা সকল দ্রব্যের গুনগতমান পরীক্ষা করতে হবে। সব পণ্যদ্রব্যের মান আইএসও (ISO) এর মাধ্যমে নিরীক্ষা করা।
    ৩. খাদ্য নিরাপত্তা : ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধে প্রতিবেশী দেশেও সরবরাহ, বিনিময় ও মান নির্ণয়ে সকলকে সচেতন করতে হবে। WFO, ISO, WHO এসব সংস্থার নিয়ম-নীতি মানা।
    ৪. দক্ষতা ও অবকাঠামাে : খাদ্যকে ভেজাল মুক্ত করতে অবশ্যই কারিগরি দক্ষতার পাশাপাশি অবকাঠামো বৃদ্ধি করতে হবে। সকল প্যাকেট জাত দ্রব্য কিংবা ব্রান্ডের দ্রব্যে বি,এস,টি,আই(BSTI) দ্বারা পরীক্ষা করে শীল ব্যবহার করা।

    খাদ্যে ভেজাল প্রতিরােধে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

    Post a Comment

    0 Comments