আখের রস মানবদেহে বিপুল পরিবর্তন ঘটায়




    আখের রস আমাদের দেহে অনেক উন্নতি ঘটায় ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে





    ক্লান্তি থেকে শরীর ও মনকে চাঙ্গা করতে প্রতিদিন আখের রস খাওয়া খুবই উপকারী। গর্ভবতী নারীরা ও শরীরে পুষ্টি যোগাতে এটি খেতে পারে।এছাড়াও যারা ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত, তারাও আখের রস খেতে পারেন। আখের রসের অন্যতম একটি গুন হল, এটি আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও হজম ক্ষমতার উন্নতি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে দেহে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এমনকি আখের রস লিভারের ক্ষমতা বাড়ায়। আখের রসে আছে নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমন: পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক এবং রাইবোফ্লেবিন। যা শরীরে প্রবেশ করে শরীরে ক্লান্তি দূর করে এবং শারীরিক উন্নতি ঘটায়।


    রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা: আখের রসে বৃদ্ধমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে ফেলে। যার কারনে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনেক শক্তিশালী হয়। যার ফলে শরীরে কোন ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।


    গর্ভবতীদের মহিলা: আখের রসে ফলিক এসিড বিদ্যমান। এটি গর্ভবতীদের মহিলাদের শরীরে প্রবেশ করে প্রেগন্যান্সি সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর করে থাকে। এমনকি আখের রস বাচ্চার শারীরিক উন্নতিতে সাহায্য করে।


    দেহে অঙ্গের ক্ষমতা বৃদ্ধি: প্রতিদিন কোন ব্যাক্তি আখের রস খেলে তার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যার ফলে শরীরে রোগপ্রতিরোধ বৃদ্ধি পায়। সেনসরি অর্গেন, রিপ্রাডাকটিভ অর্গেন রয়েছে আখের রসে। এটি ব্রেনের ক্ষমতাও অনেকংশে বৃদ্ধি করে এবং আয়ুও বাড়ে। 


    ডায়াবেটিস: গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে থাকার জন্য আখের রস খেলে রক্তে শর্করার পরিমান বৃদ্ধি পাওয়ায় দেহে কোনো ধরনের আশঙ্কা থাকে না। আখের রস দেহের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে।


    কোষ্ঠকাঠিন্য: আখের রসে আছে ল্যাক্সেটিভ প্রপাটিজ বাওয়েল। যা মুভমেন্টের উন্নতি সাধন করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের দূর করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়াও আখে রয়েছে অ্যালকেলাইন প্রপাটিজ। যা গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।


    কিডনির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি: আখের রসে বিদ্যমান নানা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা দেহের ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন রেব করে দেহ সুস্থ রাখে। কিডনি পাথর দূর করতে আখের রস খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


    এনার্জির ঘাটতি: আখের রসে থাকে প্রোটিন, আয়রন,কার্বোহাইড্রেট এবং পটাশিয়ামসহ নানা উপকারী উপাদান। যা আমাদের দেহের এনার্জির ঘাটতি পূরন করে শরীরকে ক্লান্তিমুক্ত করে। ফলে শরীর ও মন সতেজ থাকে।


    হজম ক্ষমতা: পূর্বে আমরা অবগত হয়েছি যে, আখের রসে পটাশিয়াম থাকে। যা আমাদের শরীরে পাচক রসের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে, যার ফলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।


    লিভারের ক্ষমতা বৃদ্ধি: কিছু কিছু শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে যে আখের রস লিভার সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। জন্ডিসের প্রকোপ কমাতে আখের রস অন্যতম কার্যকরী উপাদান হিসেবে বিবেচিত। চিকিৎসক জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীকে আখের রস খাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে থাকে। তাছাড়াও শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে পুষ্টি যোগায় আখ।


    ত্বকের বয়স কমে: আখের রস দেহের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফ্লেবোনয়েড বৃদ্ধি করে। এইগুলোর কাজ হল ত্বক এবং শরীরের ক্ষতিকর টক্সিড দেহ থেকে বের করা। এর কারনে শরীরের সাথে ত্বকের বয়স বাড়ে না।


    ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে : হাই কোলেস্টেরল বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষেরই চিন্তার অন্যতম কারন। আখের রস দেহের কোলেস্টেরল বের করে দেয়। ফলে আমাদের শরীরে এই ক্ষতিকর উপাদান থাকে না এবং আমাদের দেহ সুস্থ্য থাকে। পাশাপাশি আখের রস হার্টের জন্যও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।


    মুখ গহ্বরের উন্নতি: আখে রয়েছে প্রচুর পরিমান ক্যালসিয়াম, যার কারণে আখের রস বেশি পরিমানে খেলে হাড় শক্ত হয়। একই সাথে এটি দাঁতের মজবুত করে তুলে। আখের রস ক্যাভিটি ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকে দাঁতকে রক্ষা করে।


    ব্রণের চিকিৎসা : আখে থাকে আলফা হাইড্রক্সি এসিড। যা আমাদের স্কিনের সেলের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ব্রণের আশংকা কমায়। এটি মুখে পরা ব্রণের দাগ কমাতে ভূমিকা পালন করে। এর জন্য পরিমাণ অনুযায়ী আখের রস সাথে মুলতানি মাটি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই পেস্টটি মুখে দিয়ে ২০ মিনিট রাখতে হবে। তারপর মুখ ধুয়ে নিতে তোয়ালের সাহায্যে মুখ মুছে নিন।

    Post a Comment

    0 Comments