ব্রণ দূর করার সহজ মাধ্যম।



    আপনার মুখে কি খুব বেশি ব্রণ?




    সবার মত আপনিও ব্রন নিয়ে সারাক্ষণ ভাবেন? হয়তো আপনি ব্রনের জন্য অনেক ক্রিমও ব্যাবহার করেন।




    ব্রণ থেকে রক্ষা পেতে ঘরে বানানো ৩ টি ফেস মাস্ক

    সব নারীরই ব্রন হতে পারে হোক সে অল্প কিংবা বেশি বয়সী। শুধু নারী নয়, নারীর পাশাপাশি পুরুষেরও ব্রণ অন্যতম একটি সমস্যা।

    পত্যেকেরই মোটামুটি ভাবে ব্রণ নিয়ে চেষ্টার কমতি নেই। শত কষ্ট করে ব্রণ দূর করতে পারলেও থেকে যায় দাগ। এবার কি করনীয়?

    ব্রণের ও মুখ থেকে দাগ হওয়ার কারন বা প্রতিরোধের উপায়

    মহিলাদের গর্ভকালীন অবস্থায় ক্লান্তি এবং ঘুমের সমস্যার জন্য যা প্রয়োজন

    গর্ভের প্রথম ১২ সপ্তাহ মহিলাদের বেশি ক্লান্ত অনুভব হয়। 

    আমাদের সকলের জন্য ব্রন হল একটি সাধারন সমস্যা। যার সামনে আমরা অধিকাংশ মানুষই কম বেশি পরতে হয়।

    মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করার জন্য খুব পটো ব্রণ। আমাদের মুখে তৈলগ্রন্থি থাকে। যা ব্যাটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে, এর আকার বেড়ে ভিতরে পুঁজের সৃষ্টি হয়, আস্তে আস্তে এটি ব্রণ হয়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ করলে দেখা যায় টিনেজার মেয়েরা ব্রণে আক্রান্ত বেশি থাকে। কিছু কৌশল অবলম্বন করলেই আপনি পেতে পারেন ব্রন থেকে মুক্তি। দামি কসমেটিক্স আর ক্রিম ব্রন কমায় না।এ জন্য আপনি ব্যবহার করুন ঘরোয়া সঠিক পদ্ধতি, যেটি নিমিশেই আপনার ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে।এক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকরী হল প্রাকৃতিক ও অরগানিক উপাদান। এটিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলতে কোন কিছুই থাকে না।

    ব্রণের দাগ ও ব্রন থেকে মুক্তি পাওয়ার ১১ টি কৌশলঃ

    ১. শশার রসঃ

    তৈলাক্ততা দূর করার অন্যতম একটি কার্যকরী উপায় হলো শশার রস। আপনি চাইলে নিয়মিত শশার রস মুখে দিতে পারবে। আবার শুধু ধূলা বালি থেকে ঘরে ফিরে মুখ শশার রস দ্বারা ধুয়ে নিতে পারেন। অথবা শশাকে কিউব করে কেটে মুখে দিতে পারবেন, ওপেন পোরসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এটি।




    ২. শশার রস ও চালের গুঁড়া সাথে মধু মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরিঃ

    শশার রস আমাদের ব্রণ থেকে মুক্তি দেয়। স্ক্রাব হিসেবে একে তৈরি করে ব্যবহার করার জন্য চালকে গুঁড়া করে ভালবাবে মিশিয়ে নিন। যদি আপনার মধুতে কোন অ্যালার্জি না থাকে, তাহলে অল্প পরিমানে মধু যোগ করুন। মাসে ৭-৮ দিন এই মিশ্রনটি ব্যবহার করতে পারবেন। ব্ল্যাকহেডস এর পাশাপাশি হোয়াইটহেডসও সম্পূর্ণ ভাবে চলে যাবে। যদি আপনার মুখে ব্রণ থাকে, তাহলে স্ক্রাব ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। শুধু শশার রস ব্যবহার করুন।

    ৩. কাঁচা হলুদ ও চন্দনকাঠের গুঁড়ো ব্যবহারঃ

    আমাদের মুখের ব্রণ দূর করার জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর দুটো উপাদান কাঁচা হলুদ এবং চন্দনকাঠের গুঁড়ো। বাটা কাঁচা হলুদ যতটুকু নিবেন ঠিক ততটুকু চন্দন কাঠের গুঁড়ো নিয়ে প্রয়োজন মত পানি দিয়ে একটি পেষ্ট বানিয়ে নিন। আপনার মুখের যেখানে ব্রণ আছে, সেই স্থানে একটু লাগান। এবং এটি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর পরিষ্কার ও ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। শুধু ব্রন নয়, ব্রনের পাশাপাশি যদি আপনার ব্রনের দাগ বা অন্য কোন দাগও থাকে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারবেন।




    ৪. আপেল ও মধুরঃ

    ব্রণ এর দাগ থেকে রক্ষা পেতে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে আপেল এবং মধুর মিশ্রণ। আপেলকে কেটে অন্য কোন উপায়ে পেষ্ট করে নিন। এরপর এতে ৫-৬ ফোঁটা পরিমান মধু যোগ করুন। ভালবাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি আপনার দগকৃত স্থানে লাগান এবং এই অবস্থায় কিছু সময় থাকুন। তারপর ঠান্ডা ও পরিষ্কার পানির সাহায্যে মুখ ধৌত করুন। এর ফলে আপনার ত্বকে টানটান অবস্থা বজায় থাকবে। প্রতি সপ্তাহে আপনি এটি ৫-৬ বার ব্যবহার করতে পারবেন। কিছুদিন অতিক্রম হওয়ার পরই ফলাফল লক্ষ করতে পারবেন।




    ৫. তুলসি পাতারঃ

    কম বেশি আমরা সবাই তুলসি পাতার সাথে পরিচিত। তুলসি পাতা খেলে যেমন উপাকারী, তেমন করে ব্রণের দূর করতে তুলসি পাতার রস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তুলসি পাতায় আয়ূরবেদিক অনেক উপাদান বিদ্যমান। তুলসি পাতার রস আপনার মুখের ব্রন হওয়া জায়গাতে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত থাকুন। তারপর হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।




    ৬. চন্দনের গুড়োঁ ও মধুর সাথে লেবুর রসঃ

    চন্দন কাঠের গুড়োঁ নিন এবং এর সাথে গোলাপ জল যোগ করুন। লেবুর রস নিন ৩ ফোঁটা পরিমান। এর সাথে মধু যোগ করুন অল্প পরিমান। ইচ্ছে করলে মধুর পরিবর্তে গোলাপ জলও ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সবার শরীরের জন্য গোলাপ জল স্বাস্থ্যকর নয়। প্রস্তুতকৃত মিশ্রণটি প্রতি সপ্তাহে ৩-৪ বার আপনার ব্রণের দাগকৃত স্থানে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন।




    ৭. দারুচিনির গুঁড়া ও গোলাপজলঃ

    যদি কোন ব্যাক্তি প্রতিদিন গোলাপজল ব্যবহারে ব্রণের দাগে ব্যবহার করে তবে দাগ কমে যাবে। দারুচিনির গুঁড়ার ও গোলাপ জল এক সাথে ভালবাবে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এই পেস্টটি ব্রণে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট হওয়ার পর পরিষ্কার পানি দ্বারা ধুয়ে নিন। ফলে ব্রণে হওয়ার সংক্রমণ অনেকাংশে কমে যায়।




    ৮. ডিমের সাদা অংশঃ

    রাতে ঘুমানোর আগে ব্রণ হওয়া স্থানে ডিমের সাদা অংশ দিয়ে ম্যাসেজ করুন। ত্বকের খসখস ভাব থেকে এটি আপনাকে মুক্তি দেবে। যদি পাশে থাকে তবে এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। আপনি ৩০ মিনিট পরই এটি ধুয়ে নিন।




    ৯. পেঁপে ও চালের গুঁড়োঃ

    ত্বকই হল মানবদেহে ব্রণ হবার কারণ। যার ত্বক পরিষ্কার থাকে তার ব্রন হওয়ার সম্ভবনা কম। স্ক্রাবিং ত্বককে বাইরের ময়লা থেকে রক্ষা করে। এক কাপ পরিমান পাকা পেঁপে ব্লেন্ডার দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। লেবুর রস এক টেবিল চামচ পরিমান এবং প্রয়োজন মত চালের গুঁড়ো যোগ করুন। এটি মুখের পাশাপাশি সারা শরীরেও লাগাতে পারেন। ২৫-৩০ মিনিট রেখে গোসল করে নিন। 




    ১০. মুলতানি মাটি ও নিম পাতার পেষ্টঃ

    মানবদেহে নিম পাতার গুরুত্ব অনেক। চার অথবা পাঁচটি নিম পাতা নিয়ে শিল-পাটায় পিষিয়ে নিন। এতে মুলতানি মাটি নিন এক টেবিল চামচ পরিমান। হালকা করে গোলাপ জল দিয়ে প্যাক বানান। খেয়াল রাখবেন প্যাকটি যেন গাঢ় না হয়। এবার মুখে লাগিয়ে নিন ভাল করে এবং কিছুক্ষণ পর শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে নিন।




    ১১. পুদিনা পাতার মিশ্রনঃ

    গরমে আমাদের ত্বকে ব্রণ হওয়ার আশংকা বেশি থাকে। পুদিনা পাতা ব্রন দূর করতে খুব উপকারী। পুদিনা পাতা ৪-৫ টি নিয়ে পিষে ব্রণে লাগান। এবং ২০ মিনিট হয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।







    এই ব্রণ ও ব্রণের দাগের হাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস




    ১. বেশি বেশি পানি পান করুন। পানি আপনাকে সকল ধরনের রোগ থেকে রক্ষা করবে। এমনকি ব্রন থেকেও। দৈনিক অন্তত ৮-১০ গ্লাস পরিমান পানি পান করুন।




    ২. সবসময় রাতে ঘুমানোর আগে খাবার খাওয়ার একটু আগে ফল খান। আপনার শরীর ও ত্বককে সজীব রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তেলযুক্ত ও ফাষ্ট ফুডের সকল খাবার গ্রহন থেকে বিরত থাকুন।




    ৩. বাইরে গেলে ফিরে আসার সাথে সাথে মুখ পরিষ্কার করে নিন পানি অথবা ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করে। কুসুম গরম পানি থেকে ভাফ নিয়ে ত্বকে জমা ময়লা দূর করতে পারেন। 




    ৪. নখ দিয়ে ব্রন খুটে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া খুব কষ্টকর। ব্রনে নখ লাগলে উপকারের চেয়ে ব্রণের অবস্থা খারাপই বেশি হয়। কেননা নখে অনেক জীবাণু থাকে। নখ লাগলেই ব্রণ লালচে বর্ন ধারন করে। মুখের ব্রণ ভালো হওয়ার আগে পর্যন্ত মেক-আপ ব্যবহার খুবই ক্ষতিকর। মুখ তৈলাক্ত অবস্থায় রাখা যাবে না।




    যাদের ব্রনের সমস্যা বেশি তারা সময় না নষ্ট করে, উপরের পদ্ধতিটি গুলো গ্রহন করুন। তাছাড়াও যদি আপনার ব্রনের অবস্থা বেশি খারাপ হয় তবে নিকটস্ত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করুন। তবে ব্রণের জন্য পাকৃতিক উপাদান বেশি উপাকারী।

    Post a Comment

    0 Comments